অনলাইন ডেস্ক: বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় একটি আবাসিক হোটেল থেকে আল-আমিন ওরফে তানভির (২৪) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২০ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে আবাসিক হোটেলের চতুর্থ তলার ১২৬ নম্বর কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার প্রেমিকাসহ পাঁচজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
মৃত আল-আমিন উজিরপুর উপজেলার পরমানন্দসাহা এলাকার মোস্তফা হাওলাদারের ছেলে। তিনি রাজধানীর বাংলামোটর এলাকার প্রিন্স করপোরেশনে জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আটককৃতরা হলেন, আল-আমিনের প্রেমিকা ইসরাত জাহান মীম, মো. মানিক, মো সুজন, মো. পারভেজ ও মো. রাব্বি। ইসরাত জাহান মীম নগরীর নিউ সার্কুলার রোড এলাকার কবির হোসেনের মেয়ে। তিনি নগরীর সরকারী সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
আল-আমিনের বোন লাকি আক্তার জানান, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর তার ভাই আল-আমিন ও ইসরাত জাহান মীম প্রায় এক মাস আগে বিয়ে করেন। তবে ওই বিয়ে মেনে নেয়নি ইসরাত জাহান মীমের পরিবার। বিয়ের পর ঢাকার কর্মস্থলে ফিরে যান তার ভাই আল-আমিন। গতকাল শুক্রবার ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। সকালে ইসরাত জাহান মীমের সঙ্গে দেখা করতে ওই হোটেলে যান। পরে খবর পাই হোটেল কক্ষে ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে।
লাকি আক্তারের দাবি, ইসরাত জাহান মীমের পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করায় তার ভাই আল-আমিনকে হত্যা করা হয়েছে। আর এতে ইসরাত জাহান মীমও সহায়তা করেছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হলে কখন, কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বেরিয়ে আসবে।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ইসরাত জাহান মীমের বাবা কবির হোসেন জানান, তার মেয়ে ইসরাত জাহান মীমের সঙ্গে আল-আমিনের পরিচয় ছিল। তবে বিয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সকালে আল-আমিন ফোন করে তার মেয়ে ইসরাত জাহান মীমকে হোটেলে ডেকে আনে। পরে মেয়ে হোটেল থেকে বাসায় ফেরার জন্য রওনা হলে আল-আমিন নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, সকাল ১০টার দিকে আল-আমিন ইসরাত জাহানকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই হোটেলের ১২৬ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সাড়ে ১১টার দিকে ওই হোটেলের এক কর্মচারী কক্ষটির দরজা খোলা অবস্থায় আল-আমিনের মরদেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ হোটেল কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সেখানে থাকা আল-আমিনের প্রেমিকা ইসরাত জাহান, মো. মানিক, মো সুজন, মো. পারভেজ ও মো. রাব্বিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা নিয়ে আসা হয়।
ওসি কমলেশ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে ইসরাত জাহান পুলিশকে জানান আল-আমিন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তিনি তার স্বজন বা পরিচিত ব্যক্তিদের ফোন করে হোটেলে ডেকে আনেন। এর কিছুক্ষণ পরই আল-আমিনের মৃত্যু হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আল-আমিনের গলায় ফাঁস দেয়ার দাগ রয়েছে। জিজ্ঞসাবাদে পাঁচজনই অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পাশাপাশি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.